খুলনা ও যশোর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী চুইঝাল, স্বাদে ও বহুগুণে ভরপুর, একবার মনে পড়লিই যেনো, জিভেয় 😛 জল আসে যায়
চুইঝাল দিয়ে গরুর গোস্ত, খাসির গোস্ত ও হাসের গোস্ত রান্না খুলনা ও যশোর অঞ্চলের একটা বহু পুরণো ঐতিহ্য, কিন্তু এর স্পেশাল স্বাদের গল্প ছড়িয়ে পড়েছে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও
যুগ যুগ ধরে মসলার জগতে কেনো এই চুইঝাল এতোবেশি জনপ্রিয় ??? কি উপকার আছে এতে ???
রুচি বাড়াতি
আপনার মুখি রুচি থাক বা না থাক, কোনো ব্যাপার না, দেশি এই চুইঝাল দিয়ে গরুর গোস্ত, খাসির গোস্ত কিংবা হাসের গোস্ত রান্না করে খাবেন, খাবারের রুচি মুহুর্তের মধ্যে বাড়ে যায়ে গোস্তের স্বাদ এতোটা বাড়বে যে পেটপুরে খাতি 😂 পারবেন। যাগের খিদে লাগেনা তাগের জন্যি খিদেমন্দা দূর করতি ও ম্যাজিকির মতো কাজ করে
মানসিক প্রশান্তিতে
স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা বাড়াতি চুইঝাল দারুণ উপকারী।
ক্যান্সার প্রতিরোধে
এতে প্রচুর পরিমাণ আইসোফ্লাভোন ও অ্যালকালয়েড নামক ফাইটোক্যামিকাল আছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
পাকস্থলীর সমস্যা দূরীকরণে
পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ দূর করে। তাছাড়া গ্যাস্ট্রিক ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
ব্যথা দূর করতিঃ
আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করে শরীর সতেজ রাখতি সাহায্য করে।
ঘুমের ওষুধ হিসেবেঃ
এটি ঘুমের ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং শারীরিক দুর্বলতা কাটতি সাহায্য করে।
প্রসূতি ব্যথাঃ
প্রসূতি মায়ের প্রসব-পরবর্তী ব্যথা প্রশমনে ভালো কাজ করে চুইঝাল। সদ্যপ্রসূতি মায়েদের শরীরের ব্যথা কমাতি চুইঝাল ম্যাজিকির মতো কাজ করে।
অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিস রোগের ওষুধ হিসেবে
অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিস রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগপ্রতিরোধে চুইঝাল বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগপ্রতিরোধে সাহায্য করে
কোন কোন রান্নায় চুইঝাল দিলি টেস্ট কয়েকগুণ বাড়ে ???
চুইঝাল দিয়ে গরুর গোস্ত, খাসির গোস্ত ও হাসের গোস্ত রান্না খুলনা ও যশোর অঞ্চলের একটা বহু পুরণো ঐতিহ্য, কিন্তু এর স্পেশাল স্বাদের গল্প ছড়িয়ে পড়েছে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও
কতটুকু গোস্তে কতটুকু চুইঝাল দিতে হয় ?
কাচা চুইঝালের ছালের অংশ পরিষ্কার করে তারপর সেটি ১/২ইঞ্চি লম্বা পাতলা টুকরো করে পিস করে নিতি হবে। ১ কেজি কাচা চুইঝাল দিয়ে ৬/৮ কেজি গোস্ত রান্না করা যায়, তবে যারা আরো বেশি পছন্দ করে তারা পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দেয়। গোস্ত ছাড়া অন্যান্য রান্নায় পছন্দমতো করে কম বেশি দিয়ে রান্না করা যায়।
কোন চুইঝাল বেশি ভালো ???
চুইঝাল কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে, ঝোপ চুই, দেশি গেছো চুই, পাহাড়ি চুই। এদের মধ্যি😅 সবচেয়ে উপকারী এবং টেস্টি চুইঝাল হলো দেশি গাছো😛 (গেছো) চুইঝাল। এই চুইঝাল বিভিন্ন প্রকার গাছে লতাপাতার মতো জন্মে। অন্যান্য চুইঝাল থেকে গাছো (গেছো) চুইঝাল খাওয়ার উপযুক্ত হয় দেরীতে, ১ থেকে ২ বছরের বেশি সময় লাগে কিন্তু এর স্বাদ অন্য চুইঝাল থেকে বেশি। গাছো (গেছো) চুইঝালের মধ্যে আবার দুই ধরণের হয়। মাটির নিচের এটো অংশ গোস্তের সাথে প্রায় গলে গিয়ে গোস্তের স্বাদ বাড়ায় আর এই অংশের দামটাও বেশি, আর মাটির উপরের অংশ যেটা গাছের মতো সেটি ডাটার মতো চাবায়ে চাবায়ে (চিবিয়ে চিবিয়ে) চিবিয়ে খাতি হয়, এই অংশের দাম কিছুটা কম তবে স্বাদ একই। পার্থক্য হচ্ছে একটা গোস্তের সাথে গলে যায়, আরেকটা গলে না।
কোন অঞ্চলের চুইঝাল সেরা?
রাজশাহীর আম, বগুড়ার দই, কুমিল্লার রসমালাই এগুলো যেমন প্রসিদ্ধ ও বংশ পরম্পরায় চলে আসছে, ঠিক তেমনি যশোর ও খুলনা অঞ্চলের চুইঝাল হলো ঐতিহ্যবাহী ও বহু পুরণো। এই অঞ্চলে বিভিন্ন গাছের গোড়ায় চুইঝালের ডাল পুতে রাখে (রোপন করা)। আস্তে আস্তে সেটা লতাপাতার মতো বিভিন্ন গাছে ছড়িয়ে পড়ে। এই চুইঝাল খাওয়ার উপযোগো হতে ১ থেকে দুই বা তিনবছর পর্যন্ত লেগে যায়। এটাকেই আমরা দেশি চুইঝাল কই (বলি) আর এর স্বাদ অন্য কোনো চুইঝালের সাথে তুলনা হয়না।
এছাড়া আমাদের দেশে পাহাড়ি ও ইন্ডিয়ান চুই পাওয়া যায়, যা খেতে তেমন ভালো হয়না।
কেনো আমাগ্যে😛 কাছ থেকেই নেবেন ???
আমাগ্যে বাড়ি যশোর হওয়াতে ছোটোকাল থেকেই আমরা চুইঝাল সম্পর্কে জানি এবং আমার ফ্যামিলির সবাই চুইঝাল খাতি😛 খুব পছন্দ করে। নিজেগের যতোটুকু প্রয়োজন আমরা গাছ লাগায়ে সেটা পুরণ করি, মাঝে মাঝে কৃষকের কাছ থেকেও কিনে থাকি। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে আমরা চুইঝালের বাগান থেকে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে চুইঝালের বাগান কিনে অন্য কোনো মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই দেশে প্রতিটি অঞ্চলে হোম ডেলিভারী ও বিদেশেও পাঠিয়ে থাকি। আর চুইঝাল সর্বোচ্চ ভালোটা রিজনএবল প্রাইসে পাবেন, ইনশাআল্লাহ।
চুইঝাল মূল্য
কাচা চুইঝাল ৪০০ গ্রাম এবং চুইঝাল পাওডার ১০০ গ্রাম৯৯০টাকা
চুইঝাল ৮০০ গ্রাম এবং চুইঝাল পাওডার ২০০ গ্রাম১৫৫০টাকা